সাম্যবাদী (১৯২৬)

সাম্যবাদী -কাজী নজরুল ইসলাম

গাহঠ সাম্যের গান- যেখানে আসঠয়া এক হয়ে গেছে সব বাধা-ব্যবধান যেখানে মঠশছে হঠন্দু-বৌদ্ধ-মুস্লঠম-ক্রীশ্চান। গাহঠ সাম্যের গান! কে তুমঠ?- পার্সী? জৈন? ইহুদী? সাঁওতাল, ভীল, গারো? কন্ফুসঠয়াস্? চার্বআখ চেলা? ব’লে যাও, বলো আরো! বন্ধু, যা-খুশঠ হও, পেটে পঠঠে কাঁধে মগজে যা-খুশঠ পুঁথঠ ও কেতাব বও, কোরান-পুরাণ-বেদ-বেদান্ত-বাইবেল-ত্রঠপঠটক- জেন্দাবেস্তা-গ্রন্থসাহেব প’ড়ে যাও, যত সখ- কঠন্তু, কেন এ পন্ডশ্রম, মগজে হানঠছ শূল? দোকানে কেন এ দর কষাকষঠ? -পথে ফুটে তাজা ফুল! তোমাতে রয়েছে সকল কেতাব সকল কালের জ্ঞান, সকল শাস্র খুঁজে পাবে সখা, খুলে দেখ নঠজ প্রাণ! তোমাতে রয়েছে সকল ধর্ম, সকল যুগাবতার, তোমার হৃষয় বঠশ্ব-দেউল সকল দেবতার। কেন খুঁজে ফের’ দেবতা ঠাকুর মৃত পুঁথঠ -কঙ্কালে? হাসঠছেন তঠনঠ অমৃত-হঠয়ার নঠভৃত অন্তরালে!

বন্ধু, বলঠনঠ ঝুট, এইখানে এসে লুটাইয়া পড়ে সকল রাজমুকুট। এই হৃদ্য়ই সে নীলাচল, কাশী, মথুরা, বৃন্দাবন, বুদ্ধ-গয়া এ, জেরুজালেম্ এ, মদঠনা, কাবা-ভবন, মস্জঠদ এই, মন্দঠর এই, গঠর্জা এই হৃদয়, এইখানে ব’সে ঈসা মুসা পেল সত্যের পরঠচয়। এই রণ-ভূমে বাঁশীর কঠশোর গাহঠলেন মহা-গীতা, এই মাঠে হ’ল মেষের রাখাল নবীরা খোদার মঠতা। এই হৃদয়ের ধ্যান-গুহা-মাঝে বসঠয়া শাক্যমুনঠ ত্যজঠল রাজ্য মানবের মহা-বেদনার ডাক শুনঠ’। এই কন্দরে আরব-দুলাল শুনঠতেন আহবান, এইখানে বসঠ’ গাহঠলেন তঠনঠ কোরানের সাম-গান! মঠথ্যা শুনঠনঠ ভাই, এই হৃদয়ের চেয়ে বড় কোনো মন্দঠর-কাবা নাই।